ভাষা ও সংস্কৃতি
ভাষা
ভাষা বিচারে উপভাষাকে আঞ্চলিক ভাষা বলা হয়। একটি নির্দিষ্ট ভাষার মূলরূপ থেকেই বিচ্ছিন্ন ভাষাই হচ্ছে আঞ্চলিক ভাষা বা উপভাষা। ভাষা বিজ্ঞানে শব্দতত্ত্ব, ধ্বনিতত্ত্ব এবং রূপতত্ত্ব তিনটি ক্ষেত্রেই এ বিচ্যুতি লক্ষ্ করা যায়। সাহিত্যের সৌখিন ভাষার যেমন নিজস্ব শব্দ তত্ত্ব ধ্বনিতত্ত্ব ও রূপতত্ত্ব আছে। তেমনি আঞ্চলিক ভাষার বা উপভাষার আছে নিজস্ব শব্দ, ধ্বনি ও রূপ সম্পদ। আঞ্চলিক ভাষা নতুন ভাষা নয়। ভৌগোলিক সীমারেখার মাঝেই আঞ্চলিক রূপে প্রতিভূত। আর মাগুরা জেলার ভাষায় এর ব্যতিক্রমধর্মী নয়।
বাংলাদেশের সব জেলার আঞ্চলিক ভাষার মতই মাগুরা জেলার ভাষায়ও অঞ্চল ভেদে তারতম্য লক্ষ করা যায়। এ জেলার মধুমতি নদীর পশ্চিম পাড়ের উপজেলা শ্রীপুর ও মহম্মদপুরের বিভিন্ন গ্রামের মানুষেরা ফরিদপুরের আঞ্চলিক ভাষার বাচনভঙ্গির কিছু কিছু সাদৃশ্য লক্ষ্ করা যায়। তাই সূক্ষ্মভাবে পর্যালোচনা করলে দেখা যায় মাগুরা জেলার উপজেলাভিত্তিক আঞ্চলিক ভাষা রয়েছে। যশোর জেলার একটি মহকুমা ছিল আজকের মাগুরা জেলা ।১৯৬৫ সালে বাংলাদেশের আঞ্চলিক ভাষার অভিধানে’ গ্রিয়ার্সন কর্তৃক সংগৃহীত ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ যশোরের আঞ্চলিক ভাষার যে নমুনা উল্লেখ করেছেন তা হলো ‘‘এ্যাক যোনের দু’ট সলস্যাল। তারগে মোদদি ছোট যোন তার, বাপেরে বলে, বাবা যমা- যুমির যে ভাগ আমি পাব, তা আমারে দাও। তাতে শে তারগে বিশই ভাগ কোর্যা দ্যালে। কিন্তু এ কথা গুলো মাগুরা জেলার মহম্মদপুর উপজেলার দক্ষিণের কিছু অংশের লোকেরা এ ভাবে প্রকাশ করেঃ ‘‘এ্যাক যোনের দুডে সাওয়াল ছেলো। তাগের মোদদি ছোট যোন তার বাপেরে কলো, বাজান যুমাযমির বাগ যা আমি পাই, তা আমারে দ্যাও। তহন যে বিটা তার বিষয় আশায় যা ছেলো তা তার ছাওয়ালগের ভাগ করে দেলো।’’ এ কথাই আবার মাগুরা জেলার সদর উপজেলার পশ্চিম অংশের ও শ্রীপুর উপজেলার পশ্চিম অংশের অনেক গ্রামের লোকে এ কথা এভাবে প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন,‘‘ এক যোনের দুডো সাওয়াল ছিল তাগের মদদি ছোট যোন তার বাপেরে কলো বাপ যুমাযুমির ভাগ যা আমি পাই তা আমারে দ্যাও। তাহন তার বাপ তার বিত্তি ব্যাশাত যা চিল তা তার সাওয়ালগের ভাগ করে দিলো।’’ এটা বিশ্লেষণ করলে দাঁড়ায়, তিনটি বক্তব্য বচনভঙ্গির উচ্চারণ ও ধ্বনিগত পার্থক্য রয়েছে।
যেমন দুট-দুডে দুডো ও কলে-কলো-কালে ইত্যাদি। মাগুরা জেলার উপভাষা শ্রেণি ভেদে পূর্ব দেশী বিভাগের একটি পূর্ব কেন্দ্রিক প্রশাখা। বৃহত্তর যশোর, খুলনা ও ফরিদপুর এর (দক্ষিণ পূর্বাশৎ ব্যতীত) কথ্য ভাষাকে পূর্ব দেশী শাখার একটি প্রধান শাখারূপে নির্দেশ করে। এছাড়া এ জেলার উপভাষার শব্দে অন্ত ব্যতীত সর্বত্র মহাপ্রাণ ধ্বনি রক্ষিত। কালের বিবর্তনে আঞ্চলিক ভাষা পরিবর্তন সাধিত হচ্ছে। নিম্নে কিছু আঞ্চলিক ভাষা দেয়া হলো যে গুলোর অস্তিত্ব প্রায় বিলুপ্তির পথে।
আউড়ি (বি)- ধান রাখার গোলা। আড়োং (বি)- নারকেলের মালার তৈরি চামচ। অপাই (বিণ)- অপয়া। অবোগগা (বি)- অবহেলা। অযোমমা (বিণ)- অজম্মা। অরমুকতালে- (বিণ) অলস। আধমদদা (বিণ)- যে মেয়েলী চালে চলে। আলটা (বি.)- ঢেকি ছাটা চালের মধ্যে আসত্ম ধান। উযোশুযো (বি.)- সোজাসুজি, উড়োদড়ি (বি.)- খেজুর গাছের রস সংগ্রহ করার জন্য ব্যবহৃত রশি। উড়োপোকা (বি)- মাছি। এ্যাকশাড়ে (বিণ)- যে মিশুক নয়। ওকি (সর্ব.)- ওকে। ওকেডা- (সর্ব)- সে কে। কওর (বি.)- বাঁশের তৈরী ঝাঁপ। কচন দেয়া (ক্রি)- মার দেয়া। কচাকচ (অব্য.)- তাড়াতাড়ি। কচকাচি (বি.) ঝগড়া। কদমে (বি.) কুমড়ো তরকারি। কমিনদে (ক্রি.)- কোন পথ দিয়ে । কাঁচড়া (বি.)- হাতে পাকানো মোটা দড়ি। কাড়া করা (ক্রি.)- ঢেঁকি দ্বারা চাউল কাড়া। কালি (বি.)- পেয়াজের ফুল। কাশন (বি.)- এক প্রকার তরল রস। কিরাম (বিণ.)- কি রকম। কুচে (বি.)- সাপের মত মাছ। কুচলোনি (বি.)- তীব্র বাসনা। কুতকুত করা (ক্রি.)- ইতস্ততঃ করা। কেনদল (বি.)- বাশনির্মিত দন্ড। দেনদাল (বি.)- খড় নাড়ার লাঠি, খাপাশি (বি.)- খুনতি। খুনখুনে (বি.)- বাঁশের তৈরী মাছ ধরার অস্ত্র বিশেষ। গড়মারা (ক্রি.)- সর্বনাশ করা। গাবাওয়া (ক্রি.)- বিরক্ত করা। গোংড়া (বিণ.)- বোকা, গোবোদ (বিণ.) বোকা। ঘাপ (ক্রি.)- চুপচাপ। ঘুনি (ক্রি.)- ছোট মাছ ধরার যন্ত্র বিশেষ। চিতেই পিঠা (বি.)- এক প্রকার পিঠা। ছেমড়ি (বি.)- মেয়ে। ছেমড়া (বি.)- ছেলে। ছওয়াল (বি.)- ছেলে। ছুরাণী (বি.)- চাবি। ছই (বি.)-ঢাকনা। ছ্যাচড়া (বিণ.)- কৃপণ। জাউ (বি.)- খাদ্য সামগ্রী বিশেষ। যামোই (বি.)-জামাই। যিয়েল মাছ(বিণ.) - শিংমাছ। যুরোমাছ (বিণ.)- ছোট মাছ। ঝাই (বি.) গুড় তৈরির উপকরণ, ঝাঝরি (বি.)- মাখন তোলার বাঁশের যন্ত্র। ঝিনেই (বি.)-ঝিনুক। টংক (বিণ.)- শক্ত। টাহা (বি.)-টাকা। টোংগা (বি.)- আম পাড়ার থলে। ডাশা (বি.)- চমৎকার। ডুগা (ক্রি.)- পাটের তৈরি রশি। ডুয়া (বিণ.)- ঘরের চারাদিকের উচু মাটির সিড়ি। ঢক (বি.)- কাঠামো। ঢলতা (বি.)- মাপে অতিরিক্ত । ঢালুন (বি.)- গাভী দোহনের মাটির পাত্র বিশেষ। তারা বাইন (বি.)- মাছ বিশেষ। তুমার (সর্ব.)- তোমার। ত্যালোটাকি (বি.)-মাছ বিশেষ। দয়াকেলা (বি.)- বীচিপূর্ণ কলা। দুড়ে (বি.)- মাছ ধরার যন্ত্র। ধাপড়া পিঠে (বি.)- পুরুপিঠে। নয়ানযুনি (ব.)- রাস্তার দু’পাশের জলাশয়। নস (বি.)-রস। নাংগা (বি.)-লাল। নাহাড়ি (বি.)-ভাত তরকারি নাড়বার কাঠের হাতা বিশেষ। নিরবংশা (ক্রি.)-বংশ নিপাত। ন্যাতোড় (বি.)- আবর্জনা। ন্যাহাপড়া (বি.)-লেখাপড়া। প্যাচাল পাড়া (ক্রি.)- বেশি কথা বলা। পাতো (বি.)- ধানের চারা। ফয়তা (বি.)- মৃত ব্যক্তির দোয়ার জন্য ভোজ। ফাইল (বি.)- চেরা কাঠ খন্ড। ফিরানি (বি.)- বরপক্ষ আগত কুটুম্ব। বাশনা (বি.)- সুগন্ধ। বাইক (বি)- সাইকেল। বুনাই(বি.)-ভগ্নিপতি। বুনডি (বি.)- বোন। ব্যাশকম (বি.)-পার্থক্য। ভদভদ করা (ক্রি.) অনাবশ্যক কথা। ভাংগাড় (বি.)- মাঠ। ভাতো টাকি (বি.)-মাছ বিশেষ। ভাদামে (বিণ.)-অকেজো। ভারাসে (বিণ.)-অসময়ে উৎপন্ন। শতালো (বিণ.)-বৈমাত্রেয়। শেরে রাখা (বি.)- লুকিয়ে রাখা। সয়লাবি (বি.)- ইয়ারর্কী। সিঁচ-গুড়িগুড়ি বৃষ্টি। সোলম (বি.)- বাতাবী লেবু। হাবড় (বি.)- কাদা। হাগড়া (বি.)-নদীর ধারের এক প্রকার গাছ।
সংস্কৃতি
মাগুরা জেলার সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক ইতিহাস নির্মাণে প্রথমেই মনে রাখতে হবে হাজার বছরের ঐতিহ্যে লালিত বাঙালি-সংস্কৃতির ইতিহাসে মাগুরার অবদান যথেষ্ট গৌরবোজ্জ্বল, যা অধিকতর গুরুত্বের ইঙ্গিতবহ। মাগুরাতেও এমন কিছু কবি সাহিত্যিক ও শিল্পী জন্ম গ্রহণ করেছেন তারা সত্যিই প্রাতঃস্মরণীয়। যাঁদের সাধনার ফসল ঘরে তুলে মাগুরা আজও কীর্তিমান।
কবি জয় চাঁদ মন্ডল মাগুরার সাংস্কৃতিক অঙ্গনের এক প্রাণপুরুষ । তার খ্যাতি ছিল কবিয়াল হিসেবে। গাজীর গানেও তার পারদর্শিতা ছিল। তার রচিত অনেক লোকসঙ্গীত ও জেলার সংস্কৃতি অঙ্গনকে সমৃদ্ধ করেছে। কবিয়াল কালাচাঁদ বখরী ছিলেন মাগুরার সংস্কৃতি অঙ্গনের অন্যতম আদি পুরুষ। তার পিতা হাকিম চাঁদ বয়াতি এবং পিতামহ বাউল চাঁদ ছিলেন খ্যাতিমান কবিয়াল। শাহ লতিফ আফি আনাহু ছিলেন মাগুরার লোকসঙ্গীতের আর এক দিকপাল। তাঁর ফকিরি মতের অনেক গান তার শিষ্যরা আজও পরিবেশন করে থাকেন।
মাগুরার লোকসঙ্গীতের ইতিহাসে মাইন্দ্রনাথ (গোস্বামী মেহিন্দির গোঁসাই) অন্যতম শ্রেষ্ঠ। জাতীয় পর্যায়ে তিনি ছিলেন সমাদৃত। ঢাকা বেতার কেন্দ্র কর্তৃক লোকসঙ্গীত সম্মেলনে তিনি মাগুরার প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। অশ্বিনী বাবু ও অনিল হাজারিকা তার প্রিয় শিষ্য । মাগুরার সঙ্গীত চর্চার ইতিহাসে জমিদারী আমল একটি গৌরবময় ভূমিকা পালন করে এসেছে। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানের সঙ্গীত চর্চা শুরু হয়েছে ষাটের দশকের প্রায় মাঝামাঝি সময় থেকে। মাগুরার তৎকালিন মহকুমা প্রশাসক সর্বজন শ্রদ্ধেয় জনাব মোঃ আসফউদ্দৌলা মাগুরাতে আর্ট কাউন্সিল গঠন করেন। তাঁকে সহযোগিতা দান করেছেন মরহুম অ্যাড. হাবিবুর রহমান, খান জিয়াউলহক, ধীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, সামসুন্নাহার মুকুল প্রমুখ। পরে তিনি ’ললিত কলা’ নামে তার বাসায় একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছিলেন। সেই প্রতিষ্ঠানে প্রথম ছাত্র হিসেবে আসা যাওয়া শুরু করেন চন্ডী প্রসাদ চট্টোপাধ্যায়। ১৯৬৬-৬৭ সালে এ্যাড. দীপক রায় চৌধুরীর বাসায় সমাজকল্যাণ অফিসে সঙ্গীতের একটি বিভাগ খোলা হয়। সেখানে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন শ্রী কমলেশ চক্রবর্তী। ১৯৬৮ সালে প্রাক্তন মন্ত্রী মেজর জেনারেল (অবঃ) এম, মজিদ-উল হক সাহেবের বাসভবনের পুরাতন একটি কক্ষে বেগম শামসুন্নাহার মুকুলের সহযোগিতায় ‘‘মাগুরা ললিত কলা বিদ্যাপীঠ’’ নামে একটি গানের স্কুল প্রতিষ্ঠা লাভ করে।
সৈয়দ শওকত আলী মাগুরা ললিত কলা বিদ্যাপীঠ থেকে বেরিয়ে গিয়ে ’আখেলী ললিতা কলা’ নামে আরো একটি সঙ্গীত প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। তার সাথে সহযোগিতা করতেন বিমল রায়, বিষ্ণু রায়, মোসাদ্দেক আলী মিন্টু, শিশির সাহা ও শিবুপদ সাহা প্রভৃতি শিল্পীগণ। দেশ স্বাধীন হবার পর খান জিয়াউল হক সাহেবের মধ্যস্ততায় ‘‘মাগুরা ললিত কলা বিদ্যাপীঠ’’ এবং ‘‘আখেলী ললিত কলা’’ প্রতিষ্ঠান দুটিকে একীভূত করে সর্বসম্মত ভাবে নামকরণ করা হয়‘‘ মাগুরা ললিত কলা শিল্পী সংস্থা’’। এখানে সঙ্গীত শিক্ষা গ্রহণ করতেন দুই প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীরা।
পরবর্তীতে ১৯৮০ সালে মাগুরাতে প্রতিষ্ঠা লাভ করে সরকারি ব্যবস্থাপনায় শিল্পকলা পরিষদ যা বর্তমানের ‘‘জেলা শিল্পকলা একাডেমী, মাগুরা।’’ এখানেও সর্বপ্রথম নিয়োগপ্রাপ্ত হন চন্ডীপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়। প্রাক্তন মন্ত্রী এম, মজিদুল হক ও তৎকালীন মহাকুমা প্রশাসক অমিয়াংশু সেন এ প্রতিষ্ঠানটির প্রধান পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। এ প্রতিষ্ঠান থেকে সঙ্গীত শিক্ষা গ্রহণ করেছেন বর্তমানে যারা মাগুরা ও জাতীয় পর্যায়েরও অত্যন্ত নামীদামি শিল্পী। তাদের মধ্যে আছেন সাইফুল ইসলাম হীরক, ডঃ রেজোয়ান আলী লাবলু, হাসিয়ারা হাসি, শিপ্রাদাস, মোঃ ওহিদুজ্জামান, কৃষ্ণা সরকার, শাহানা কবির লিকু, কার্তিক দাস, বেদ্যনাথ, বাবলু, কমল, জাহাঙ্গীর কবির, হুমায়ূন কবির ও হুমায়ন ইবনে বাবর প্রভৃতি শিল্পী বৃন্দ। মাগুরার সংস্কৃতি অঙ্গনে ‘‘শিল্পকলা একাডেমী’’ একটি বহুল পরিচিত সঙ্গীত প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি স্বয়ং জেলা প্রশাসক মহোদয় । বর্তমানে মাগুরাতে গড়ে উঠেছে আরো অনেকগুলি সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান। এদের মধ্য আছে কথা সংস্কৃতি কেন্দ্র, লালন পরিষদ, লোক সংস্কৃতি কেন্দ্র, বিবর্তন নাট্যগোষ্ঠী, অনন্যা থিয়েটার, নবান্ন থিয়েটার, থিয়েটার ইউনিট বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক পরিষদ, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট , স্বরলিপি সঙ্গীত নিকেতন ও শহীদ সিরাজউদ্দিন সাংস্কৃতিক একাডেমী। এছাড়া মাগুরাতে বর্তমানে যারা গৃহশিক্ষক হিসেবে সুপরিচিত তারা হলেন শ্রী ধীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, কমলেশ চক্রবর্তী, মধুমঙ্গল অধিকারী, শতদল রায়, অজিত রায়, সন্তোষ চক্রবর্তী, পঞ্চানন মাধব প্রামানিক, বিমল বিশ্বাস, সুকুমার পাল ও আবু জাফর প্রমুখ। মাগুরার সংস্কৃতি চর্চায় এদের অবদান উল্লেখযোগ্য।
আবৃত্তি সংস্কৃতির একটা বিশেষ দিক। খান রকিবুল হক দীপ মাগুরাতে গড়ে তোলেন একটি আবৃত্তি সংগঠন ‘কন্ঠবিথী’ মাগুরা একটি এতিহ্যবাহী আবৃত্তি সংগঠন। একে পরিচর্যা করেন আবুল বাশার, শফিক, কাজল ও গোলজার প্রভৃতি আবৃত্তিকারগণ। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ছাড়াও এককভাবে প্রতিষ্ঠানটি আবৃত্তির অনুষ্ঠান উপহার দিয়ে থাকে। প্রতিষ্ঠানটি স্মরণযোগ্য। চিত্তরঞ্জন সিকদার, বি.এম.এ হালিম মাগুরার খ্যাতনামা আবৃত্তিকার। ‘চিত্রশিল্প’ সাংস্কৃতিক অঙ্গনে একটা বিশেষ ক্ষেত্র হিসেবে স্বীকৃত। মাগুরাতে এ শিল্পের যারা চর্চা করেছেন বা করে থাকেন তারা হলেন শরিফুল ইসলাম খারেদ, শফি আহমেদ, সাইদুর রহমান, কিশোর কুমার গোলদার, খান গোলাম মোস্তফা তোতা, রতন লাল সাহা, বিশ্বজিত বিশ্বাস, ফারহাদ-বিন-সালাম সামসুজ্জামান পান্না, তাপস মজুমদার প্রমুখ। মুক্তিযোদ্ধা আজিজ রাউতাড়ায় ‘মোস্তফা আজিজ ’আর্ট স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা। মাগুরা কলেজ পাড়ায় মুক্তিযোদ্ধা আজিজের নামে একটি আর্ট স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছেন হামিদুজ্জামান মোক্তার।
মাগুরা সদর উপজেলা ছাড়াও শ্রীপুর, মহম্মদপুর ও শালিখা উপজেলায় বেশ কিছু সঙ্গীত প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। এই সকল প্রতিষ্ঠান গুলোতেও সঙ্গীত ও অন্যান্য সংস্কৃতি চর্চা হয়ে থাকে। এ ছাড়াও মাগুরাতে অনেক সরকারী ও বেসরকারী কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ ও তাদের পরিবার পরিজনবর্গ সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রেখেছেন যা শ্রদ্ধাভরে স্মরণীয়।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস